• ১৬ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৩রা বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ৭ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

প্রবাসী অধ্যুষিত মৌলভীবাজারে করোনায় আতঙ্কিত মানুষের কাছে জেলা প্রশাসক নাজিয়া শিরিন এক আলোর প্রদীপ

admin
প্রকাশিত এপ্রিল ৪, ২০২০
প্রবাসী অধ্যুষিত মৌলভীবাজারে করোনায় আতঙ্কিত মানুষের কাছে জেলা প্রশাসক নাজিয়া শিরিন এক আলোর প্রদীপ
 বেলাল তালুকদার: সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশের মানুষও করোনা ভাইরাসে আতংকিত। দেশের জনসাধারণের মধ্যে করোনা ভাইরাসে সংক্রমন এড়াতে নানাবিধ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে সরকার। সরকারের নীতিনির্ধারণী মহল ও স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে জারী করেছে কতিপয় নির্দেশনা। আর এসকল নির্দেশনা বাস্তবায়নে মহানগর, জেলা ও উপজেলা তথা মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে স্থানীয় প্রশাসন। দেশের অন্যান্য স্থানের মত প্রবাসী অধ্যুষিত মৌলভীবাজারেও যখন এ আতঙ্ক বিরাজ করছে জনমনে, তখন আলোর প্রদীপ হয়ে কর্তব্যনিষ্ঠা দিয়ে নিজেকে মেলে ধরেছেন মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক নাজিয়া শিরিন। অসীম সাহসিকতা ও অদম্য মনোবলে দৃঢ়তার সাথে সকাল থেকে রাত অবধি ছুঁটে চলেছেন জেলার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। সেই সাথে ন্যায়-নিষ্ঠা ও সততার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। আতঙ্কিত মানুষকে সচেতন করা, হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করা, বাজার মূল্য স্থিতিশীল রাখাসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলা, পৌরসভা এমনকি ইউনিয়নে অসহায়-দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষের খোঁজ-খবর নিচ্ছেন প্রতি মূহুর্তে। তাঁর এসকল কর্মযজ্ঞের কারণে এ জেলায় মানবতাবাদের এক জ্বলন্ত উদাহরণ হয়ে উঠেছেন তিনি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ জনমনেও নন্দিত হচ্ছেন এ প্রশাসনিক কর্মকর্তা। দক্ষতা, সহনশীল মানবিকতা আর সদাহাস্য আচরণ তার কর্মগুণকে প্রশংসিত করেছে পর্যটন খ্যাত জেলা মৌলভীবাজারে।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক তিনি এ জেলার জনপ্রতিনিধি, পুলিশ প্রশাসন ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদেরকে নিয়ে জনগণকে সচেতন ও হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ছুটে চলেছেন জেলার এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে। আইনের কোন ব্যত্যয় ঘটলে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে আইন অমান্যকারীর বিরুদ্ধে নিচ্ছেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা। ইতোমধ্যে যা দৃশ্যমান হয়েছে। এ জেলায় করোনা ভাইরাসকে পূঁজি করে অসাধু ব্যবসায়ীরা যখন দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করেছে তখনও বাজার নজরদারি করে একাধিক ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে অসাধু ব্যবসায়ীকে করেছেন জরিমানা। পাশাপাশি দিয়েছেন কঠোর নির্দেশনা। এদিকে করেনা ভাইরাসের সংক্রমন এড়াতে নিত্য আয়ের মানুষেরা কর্মহীন হয়ে পড়ায় তাদের সহায়তায় সরকারের পাশাপাশি নিজ উদ্যোগে শুরু করেছেন তহবিল গঠনের কাজ। সরকারী তহবিল থেকে এপর্যন্ত ২০ হাজার পরিবারকে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ও নগদ অর্থ সহায়তা দিয়েছেন। নিজস্ব তহবিল থেকে তিনি জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে অসহায় মানুষদের চিহ্নিত করে তাদের কাছে সহায়তা পৌঁছে দিচ্ছেন অবলীলায়। অত্যন্ত স্বাবলীলভাবে খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষদের তালিকা করে দিয়েছেন মাক্সসহ নানা উপকরণ। অন্যদিকে মরণব্যাধী অদৃশ্য এ ঘাতকের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা তৈরীতে মাঠ পর্যায়ে প্রচারণাসহ তাঁর অফিসিয়াল ফেইসবুক পেজে দিয়েছেন বিভিন্ন পরামর্শ। সরকারি ভাবে প্রাপ্ত খাদ্য সামগ্রী ও নগদ টাকা বন্টন করে সেই তালিকা প্রেস রিলিজের মাধ্যমে সবাই কে অবহিত করে জবাবদিহিতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তিনি মৌলভীবাজার বাসীর উদ্যেশ্যে বলেন, আমাদের সবাই কে নিজের ও পরিবারের সার্থে ভালো থাকতে হবে। তাই বাইরে নয়, ঘরে অবস্থান করুন। সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক কয়েকটা দিন কষ্ট করে নিজের, পরিবার এবং দেশের মানুষের স্বার্থে নিজ ঘরে অবস্থান করুন। তিনি বলেন সকলের সহযোগিতা থাকলে আমরা এই সংকট কাটিয়ে উঠতে পারবো।।