• ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১১ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

রাজনগর থানার ওসি নজরুল ইসলাম এর অন্যায় আচরণের প্রতিকার চেয়ে মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপারের কাছে ভুক্তভোগীর অভিযোগ 

admin
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ৬, ২০২১
রাজনগর থানার ওসি নজরুল ইসলাম এর অন্যায় আচরণের প্রতিকার চেয়ে মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপারের কাছে ভুক্তভোগীর অভিযোগ 

নিজস্ব প্রতিনিধি : মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর থানার ওসি নজরুল ইসলাম এর অন্যায় আচরণের প্রতিকার ও ন্যায়সঙ্গত সহযোগীতা চেয়ে পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন রাজনগর উপজেলার টেংরা ইউনিয়নস্থিত হরিপাশা গ্রামের প্রবাসী সায়েস্তা মিয়া। গত ৩১ আগস্ট তিনি এ আবেদন করেন।

লিখিত আবেদন সূত্রে জানা যায়- বসবাসস্থল সংলগ্ন হরিপাশা মৌজার ১২৭নং জেএলস্থিত ২৪৭নং খতিয়ানভূক্ত ১১৯৭নং দাগের সাড়ে ৩ শতক ভূমির খরিদাসূত্রে মালিক ও ভোগদখলকার সায়েস্তা মিয়া গত ১৮ আগস্ট উক্ত ভূমির একাংশে গাড়ি গ্যারেজ নির্মানকাজ শুরু করলে, রাজনগর থানার এসআই হাসান এসে কাজ বন্ধ করান এবং সন্ধার পর থানায় যেতে বলেন। সায়েস্তা মিয়া সন্ধার পর থানায় গেলে এসআই হাসান জানান, প্রতিবেশী পিয়ারা বেগম (চান্দ মিয়ার স্ত্রী) তার বিরুদ্ধে তার ভূমি দখলের অভিযোগ করেছেন। তিনি বিষয়টি সালিশে মিমাংসা করার জন্য টেংরা ইউপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রিপন মিয়াকে দায়িত্ব দেন।

এর প্রেক্ষিতে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রিপন মিয়া গত ২০ আগস্ট স্থানীয় ব্যক্তিবর্গসহ সালিশে বসেন এবং উভয়পক্ষের কাগজাত পর্যবেক্ষণ ও সার্ভেয়ার দিয়ে জরিপ করালে দেখা যায়, তৃতীয়পক্ষসহ উভয়পক্ষের ভূমির জরিপে সায়েস্তা মিয়ার প্রায় ৩ ফুট এবং শুধু পিয়ারা বেগমের (চান্দ মিয়ার) ভূমির জরিপে সায়েস্তা মিয়ার ৮ ইঞ্চি ভূমি পিয়ারা বেগমের (চান্দ মিয়ার) দখলে রয়েছে। এমতাবস্থায়, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রিপন মিয়াসহ স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ ‘যে যে অবস্থায় আছেন সে অবস্থায় থাকার সিদ্ধান্ত দিলে, সায়েস্তা মিয়া বিনা বাক্যব্যয়ে তা মেনে নেন। বিষয়টি এসআই হাসানকে অবগত করতে থানায় গেলে, ওসি নজরুল ইসলাম নিজে বিষয়টি আবার দেখতে হবে বলে তাকে একসপ্তাহ নির্মানকাজ বন্ধ রাখতে বলেন।

পরে তিনি নিজে ঘটনাস্থলে এসে মনগড়া নানা কথাবার্তা বলে সায়েস্তা মিয়াকে হুমকী ধামকী দেন। তিনি বলেন, ‘আপনি ৩ ফুট ভূমি পিয়ারা বেগমকে (চান্দ মিয়াকে) দিয়ে দিন, আমি আপনাকে মূল্য দিয়ে দিব’। সায়েস্তা মিয়া এতে রাজী না হওয়ায় ওসি নজরুল ক্ষুব্ধ হন এবং পুলিশ পাঠিয়ে সায়েস্তা মিয়াকে হুমকী ধামকী অব্যাহত রাখেন। গত ৩০ আগস্ট আবারও তিনি নিজে ঘটনাস্থলে এসে সায়েস্তা মিয়াকে হুমকী ধমকী দিয়ে বলেন, ‘আপনি ৩ ফুট ভূমি পিয়ারা বেগমকে (চান্দ মিয়াকে) না দিলে এখানে কোন কাজ করতে দিবনা। কাজ করলে ধরে নিয়ে চালান করে দিব’। এমতাবস্থায় নিরুপায় হয়ে সায়েস্তা মিয়া মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপারের স্মরনাপন্ন হতে বাধ্য হন। তিনি এ ব্যাপারে সিলেটের ডিআইজিকে অনুলিপিসহ পুলিশ সুপারের ন্যায়সঙ্গত সহযোগীতা ও রাজনগর থানার ওসির অন্যায় আচরণের প্রতিকার চেয়ে লিখিত আবেদন করেন। পুলিশ সুপার বিষয়টি দ্রুত তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য তাৎক্ষণিকভাবে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) জিয়াউর রহমানকে দায়িত্ব প্রদান করেছেন।

 

টেংরা ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রিপন মিয়া বলেন-অভিযোগের ভিত্তিতে উভয় পক্ষকে নিয়ে এসআই হাসান আমাকে সালিশ নিযুক্ত করে বিষয়টি মাপ যোগ করে মতামত জানাতে বলেন। আমি ২০ শে আগষ্ট শুক্রবার সকাল ১১ ঘটিকায় তিনজন সার্ভেয়ার ও এলাকার মুরব্বিদের কে নিয়ে জায়গা পরিমাপ করি এবং দেখতে পাই পিয়ারা বেগম এর বাউন্ডারির ভিতর প্রায় ৮ ইঞ্চি জায়গা শায়েস্তা মিয়ার রয়েছে। পরে সমাধানের স্বার্থে উভয়পক্ষকে নিজ নিজ জায়গায় অবস্থানের পরামর্শ দেই এবং অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য আবেদনকারী তারেককে জানাই । কিন্তু ওসি সাহেব আমাদের মতামত না নিয়েই কেন ৩ ফুট যায়গা চেয়েছেন তা আমাদের বোধগম্য হয়নি।পরবর্তীতে সায়েস্তা মিয়ার সাথে অশালীন আচরণ করেছেন বলে শুনেছি।

সালিশকারী স্থানীয় মুরব্বি ময়না মিয়া জানান আমরা বিষয়টি উভয়পক্ষের মাধ্যমে মীমাংসার চেষ্টা করেছি কিন্তু ওসি সাহেব আমাদের মতামত না নিয়ে কেন এরকম আচরণ করছেন তা আমাদের জানা নেই।

এ ব্যাপারে রাজনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলামের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান এ ব্যাপারে আমার কোন বক্তব্য নেই উর্ধতন কতৃপক্ষ তদন্ত করে যে ব্যবস্থা নিবেন তা আমি মানবো।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন এই ব্যাপারে একটি অভিযোগ পেয়ে তদন্তের জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপার( সদর সার্কেল) এর নিকট পাঠিয়েছি।অভিযোগ প্রমাণিত হলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।